অভিবাসন মানে শুধু এক দেশের সীমান্ত পার হওয়া নয়, বরং এক স্বপ্নের পথে যাত্রা। পরিবারের জন্য স্থায়িত্ব, অর্থনৈতিক উন্নতি ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তার প্রত্যাশায় লাখো মানুষ প্রতিদিন বিদেশের দিকে পা বাড়ান। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষদের মধ্যে মালয়েশিয়া দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয় গন্তব্য। তবে এই পথ সহজ নয়; বরং ঝুঁকিপূর্ণ এবং অনিশ্চয়তায় ভরা। ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনের
বাস্তবতা অনেকে দালাল ও প্রতারকের ফাঁদে পড়ে। ভুয়া ভিসা, নকল চাকরির প্রতিশ্রুতি বা অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের প্রলোভনে শ্রমিকরা নিঃস্ব হয়ে যান। কেউ সমুদ্রপথে প্রাণ হারান, কেউ অমানবিক শ্রম পরিবেশে নির্যাতনের শিকার হন। এতে কেবল একজন শ্রমিক নয়, পুরো পরিবারের স্বপ্নও ভেঙে যায়। কুমিল্লার শাহাদাত হোসেন জানান, “দালালের কাছে তিন লাখ টাকা দিয়ে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলাম। এসে দেখি চাকরি নেই, কাগজপত্রও জাল। সব টাকা শেষ, পরিবারও ঋণের বোঝায় ডুবে গেছে।” আইওএম-এর উদ্যোগ আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করতে কাজ করছে। কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু হয়েছে। কর্মশালা, সেমিনার ও প্রচারণার মাধ্যমে অভিবাসীদের জানানো হয়—কীভাবে বৈধ উপায়ে বিদেশে যাত্রা করা যায়, কোন কাগজপত্র প্রয়োজন এবং কীভাবে প্রতারণার ফাঁদ এড়ানো যায়। সিলেটের প্রবাসী সেলিম উদ্দিন বলেন, “আইওএম-এর কর্মশালায় শিখেছিলাম বৈধ ভিসার উপায়। সেই তথ্য আমাকে অনেক সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করেছে। এখন বৈধভাবে কাজ করছি, পরিবারও নিরাপদ আছে।” তথ্যই অভিবাসীর শক্তি আইওএম মনে করে, ভুল তথ্য বা দালালের প্রলোভনই সমস্যার মূল। সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য গ্রহণ করলেই শ্রমিকরা ঝুঁকি এড়াতে পারবেন। কুয়ালালামপুরে আইওএম-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার বলেন, “আমাদের লক্ষ্য—শ্রমিকদের সঠিক তথ্য ও দিকনির্দেশনা দেওয়া, যেন তারা প্রতারণার শিকার না হন। একজন শ্রমিকের নিরাপদ যাত্রা মানে পুরো পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা।” বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, “অনেকে অজ্ঞতা ও ভুল তথ্যের কারণে দালালের ফাঁদে পড়েন। আমরা আইওএম-এর সঙ্গে মিলে প্রবাসীদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। বৈধ প্রক্রিয়ায় বিদেশ আসলে তারা শুধু নিরাপদ থাকবেন না, দেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে।” মালয়েশিয়ায় এখনও বিপুলসংখ্যক অনিয়মিত বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ বৈধতার জন্য আবেদন করছেন, কেউ অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে আইওএম ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের যৌথ প্রচেষ্টা প্রবাসীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। উপসংহার: অভিবাসন কোনো বিলাসিতা নয়—এটি অনেকের জন্য জীবনসংগ্রামের অংশ। সেই সংগ্রাম যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত না হয়, সেজন্য আইওএম কাজ করছে প্রতিনিয়ত। নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও মানবিক অভিবাসন নিশ্চিত করা হলো তাদের প্রধান লক্ষ্য। কারণ একজন শ্রমিকের নিরাপদ যাত্রা শুধু তার নিজের নয়, বরং তার পরিবার, সমাজ এবং দেশের জন্যও এক বিশাল অর্জন।
রিয়াদ, ৬ অক্টোবর ২০২৫: আজ রিয়াদে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং সৌদি আরবের পক্ষে মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীবিস্তারিত...
বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রম সহযোগিতাসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারে শিগগিরই একাধিক নতুন চুক্তি হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা সফররত কুয়েতের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত সামি ঈসা জোহর হায়াত। রোববার (১৯ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদেরবিস্তারিত...